New Tax Regime 2025: আয়কর নিয়ে বড় চমক! ১২ লক্ষ টাকা অবধি আয়ে লাগবে না কোনও আয়কর

২০২৫ সালের বাজেটে আয়কর কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ১২ লক্ষ টাকা অবধি আয়ে কোনো আয়কর দিতে হবে না, যা মধ্যবিত্তদের জন্য এক বিশাল স্বস্তির খবর। এছাড়া, প্রবীণ নাগরিকদের জন্যও আয়কর ছাড় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নতুন কর কাঠামোয় সাধারণ নাগরিকদের জন্য আরো সুবিধা দেয়া হয়েছে।

Union Budget 2025 Session in Indian Parliament

Last updated on February 1st, 2025 at 09:30 pm

Last Updated on February 1, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো

২০২৫ সালের বাজেটে আয়কর নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন যে বড় ঘোষণা করেছেন, তা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে এক অবিস্মরণীয় সুখবর হিসেবে এসেছে। এবার থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ে কোনো আয়কর দিতে হবে না, যা মধ্যবিত্ত ও কর্মজীবীদের জন্য বড় স্বস্তির খবর। এই ঘোষণা শুধু অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ নয়, সাধারণ মানুষের জীবনে এক বিশেষ পরিবর্তন আনতে চলেছে। এমনকি, কর কাঠামোকে আরও সরল এবং সুবিধাজনক করার লক্ষ্যে নয়া স্ল্যাবও ঘোষণা করা হয়েছে।

১২ লক্ষ টাকা অবধি আয়ে আয়কর ছাড়: কীভাবে বদলাবে আয়কর স্ল্যাব?

২০২৫ সালের বাজেটে আয়কর কাঠামোয় এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন, ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের জন্য কোনো আয়কর আর পরিশোধ করতে হবে না। অর্থাৎ, এই পরিমাণ আয় থাকলে, কোনও কর দিতে হবে না—যা নিশ্চিতভাবেই মধ্যবিত্তদের জন্য একটি বড় চমক। নতুন কর কাঠামোর ফলে, সাধারণ চাকরিজীবী এবং ছোট ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর ৮০,০০০ টাকা থেকে ১.২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর সাশ্রয় করতে পারবেন। আয়কর স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনও ৫০,০০০ থেকে বাড়িয়ে ৭৫,০০০ টাকা করা হয়েছে।

এই পরিবর্তনের ফলে, দেশের এক বিশাল জনগণের জন্য এক নতুন সুযোগ তৈরি হল, বিশেষ করে যারা আগে করের বোঝা বহন করতেন। নতুন আয়কর স্ল্যাব অনুযায়ী, আয়করের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে এইভাবে:

  • ০-৪ লক্ষ টাকা: কোনো আয়কর নয়
  • ৪ থেকে ৮ লক্ষ টাকা: ৫% আয়কর
  • ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা: ১০% আয়কর
  • ১২ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা: ১৫% আয়কর
  • ১৬ থেকে ২০ লক্ষ টাকা: ২০% আয়কর
  • ২০ লক্ষ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা: ২৫% আয়কর
  • ২৪ লক্ষ টাকা এবং তার বেশি: ৩০% আয়কর

এখন, ২৪ লক্ষ টাকার বেশি আয় হলে, আগের মতোই ৩০% কর দিতে হবে। তবে, এই পরিবর্তন এবং নতুন স্ল্যাব দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে সহজ আর্থিক পরিস্থিতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আয়কর ছাড়ের ঘোষণা

২০২৫ সালের বাজেটেও প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একটি বড় সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে। আগে যেখানে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত কর ছাড় ছিল, সেখানে তা বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া, TDS (ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স)–এ প্রবীণদের জন্য ছাড়ের সীমা ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে বেড়ে ৬ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এটি প্রবীণদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, কারণ তারা অনেক সময় সীমিত আয়ে জীবনযাপন করেন এবং এই ছাড় তাদের জন্য আর্থিক সাহায্য হিসেবে কাজ করবে।

নতুন আয়কর বিল এবং আরো সরল কর কাঠামো

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন আরও জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে একটি নতুন আয়কর বিল প্রকাশিত হবে, যার মাধ্যমে কর কাঠামো আরও সরল করা হবে। নতুন কাঠামোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কর পরিশোধ প্রক্রিয়া সহজ ও পরিষ্কার হবে। অর্থাৎ, পরবর্তী সময়ে আয়ের উপর করের নির্ধারণ আরও স্পষ্ট এবং সরল হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজে কর পরিশোধ করতে পারেন।

পুরনো ও নতুন রেজিমের তুলনা

এখন, বাজেটে দুই ধরনের আয়কর কাঠামোকে সমর্থন করা হচ্ছে—পুরনো রেজিম (Old Regime) এবং নতুন রেজিম (New Regime)। পুরনো রেজিমে যেমন স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন এবং অন্যান্য করছাড়ের সুবিধা ছিল, নতুন রেজিমে সেইসব সুবিধা নেই, তবে করের পরিমাণ কমানো হয়েছে। নতুন রেজিমে ৩ লক্ষ টাকা অবধি আয় হলে কোনো কর নেই, তবে তার পর থেকে নির্ধারিত স্ল্যাব অনুযায়ী কর দিতে হবে।

পুরনো রেজিমে যেখানে ২.৫ লক্ষ টাকা অবধি আয়ে কর ছিল না, সেখানে নতুন রেজিমে ৩ লক্ষ টাকা অবধি আয়ে কর ছাড় মিলেছে। নতুন কাঠামোয় ৩ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫%, ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ১০%, ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫%, ১২ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০% এবং ১৫ লাখ টাকা বেশি আয়ে ৩০% কর দিতে হবে।

মধ্যবিত্তদের জন্য বাজেট: একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত

এবছরের বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য আয়করের ক্ষেত্রে যে বড় ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা তাদের জীবনে অনেকটা আর্থিক স্বস্তি নিয়ে আসবে। গত কয়েক বছরে এই ধরনের বড় পরিবর্তন খুব একটা দেখা যায়নি, এবং এটি মধ্যবিত্তদের জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে। আয়কর স্ল্যাবের এই পরিবর্তন স্বাভাবিকভাবেই তাদের উপর করের চাপ কমাবে এবং জীবনের অন্যান্য খরচের জন্য আরও বেশি টাকা সঞ্চয় করার সুযোগ সৃষ্টি করবে।

সিদ্ধান্তের প্রভাব:

যেহেতু কর ছাড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং স্ল্যাবগুলো অনেকটাই সরল করা হয়েছে, এতে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ আরও গতিশীল হবে। একই সঙ্গে, সাধারণ মানুষের আয়ের উপর করের চাপ কমার ফলে তারা আর্থিক দিক থেকে আরও সচ্ছল হতে পারবেন। এর ফলে দেশে ভোক্তাবাদিতা বৃদ্ধি পাবে, যা অর্থনীতির উন্নতিতে সহায়ক হবে।

এবছরের বাজেট, বিশেষত আয়কর স্ল্যাবের পরিবর্তন, দেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য সত্যিই এক বড় উপহার। এখন, মধ্যবিত্ত শ্রেণি তাদের আয় বাড়ানোর পাশাপাশি আয়কর দিয়ে কম খরচের মধ্যে থাকবেন, যা তাদের জন্য সুখকর হবে।

২০২৫ সালের বাজেট সেশন আজ থেকে শুরু হতে চলেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করবেন। বাজেটের আগে এই সমীক্ষা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের অর্জনের বিশ্লেষণ তুলে ধরবে, যা এই বছর সরকারের পরিকল্পনা এবং কার্যকারিতার মূল্যায়ন করবে।

আজ কি ঘটবে সংসদে?

আজ সংসদে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অভিভাষণ শেষে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করবেন। আজ দুপুর ১টা নাগাদ এই সমীক্ষা লোকসভায় পেশ করা হবে, এবং একইভাবে রাজ্যসভায় এই সমীক্ষা পেশ হবে দুপুর ২টা নাগাদ। একই দিনে, অর্থনৈতিক সমীক্ষা নিয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন উপস্থিত থাকবেন।

অর্থনৈতিক সমীক্ষায় কি তথ্য প্রকাশিত হবে?

বাজেট পেশের আগে, সরকার সাধারণত অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করে, যা দেশের আর্থিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের আভাস দেয়। এই সমীক্ষায় উঠে আসবে দেশের জিডিপি গ্রোথ রেট, মুদ্রাস্ফীতি, কর্মসংস্থান পরিস্থিতি, বিভিন্ন সেক্টরের পারফরম্যান্স এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচকগুলি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, গত বছরের বাজেটে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলির কতটা কার্যকর হয়েছে তা জানা যাবে। অর্থাৎ, আগের বাজেটের দাবিগুলির কতটা পূরণ হয়েছে, সেটি বিশ্লেষিত হবে এই সমীক্ষায়।

আগের বাজেটের প্রতিশ্রুতি এবং তাদের বাস্তবায়ন

গত বছরের বাজেটে যে কিছু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সে বিষয়ে সরকারের সাফল্য এবং ব্যর্থতা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত পর্যালোচনা হবে এই সমীক্ষায়। এটি বিশেষভাবে সরকারের অর্থনৈতিক কর্মসূচি এবং প্রকল্পগুলির প্রতি জনগণের মতামত এবং মূল্যায়ন তুলে ধরবে।

সমীক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

অর্থনৈতিক সমীক্ষার অধীনে, সরকারের তরফ থেকে জানানো হবে, কীভাবে দেশের অর্থনীতি গত বছর চলতি অর্থবর্ষে অতীতের সাফল্য ধরে রেখেছে বা তার চেয়ে আরও ভালো করেছে। ভি অনন্ত নাগেশ্বরন এবং তার সহকর্মীরা এই সমীক্ষা প্রস্তুত করেছেন, যেখানে সরকারের এবং দেশের আর্থিক দৃশ্যপটের গভীর বিশ্লেষণ থাকবে।

চলতি বাজেটের সম্ভাব্য দিকগুলি

এই সমীক্ষার মাধ্যমে যে মূল দিকগুলো উঠে আসবে, তা অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ এটি পরবর্তী অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা হয়ে দাঁড়াবে। সমীক্ষা পেশের পর বাজেট পেশ হবে, যেখানে নানান খাতে নতুন প্রস্তাব এবং উদ্যোগ ঘোষণা হতে পারে।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now