Last Updated on January 29, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো
আজকের শিক্ষাব্যবস্থায় পড়ুয়াদের মানসিক চাপ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরীক্ষা, সিলেবাস, উচ্চ রেজাল্টের চাপ—এই সবই শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করছে। তবে এই চাপের মোকাবিলা করার জন্য এবার এক নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির সিলেবাসে মানসিক চাপ কমানোর জন্য একটি বিশেষ অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য পড়ুয়াদের মধ্যে মানসিক শান্তি ও শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা।
মানসিক চাপের লক্ষণ এবং তার মোকাবিলা: একজন ছাত্র বা ছাত্রীর মধ্যে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেলে তার মধ্যে নানা লক্ষণ ফুটে ওঠে। এই পাঠ্যক্রমে তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মানসিক চাপের কারণে ছাত্ররা যে হতাশা, অস্থিরতা, বা আত্মবিশ্বাসের অভাব অনুভব করে, তা সম্পর্কেও সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আইআইটি বা দেশের অন্যান্য শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে, এবং সেই ঘটনার পেছনে উঠে আসছে মানসিক চাপের ব্যাপারটি। সেজন্য, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন বিষয় এবং এর উদ্দেশ্য: এই নতুন পাঠ্যক্রমে ছাত্রদের মানসিক চাপের কারণ, লক্ষণ এবং তাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তা শেখানো হবে। এর মধ্যে ব্যায়াম, যোগা, এবং মনোবিক্রিয়া সংক্রান্ত নানা দিক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ছাত্রদের মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক হবে। শিক্ষকরা কীভাবে ক্লাস নেবেন, তা নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। এইভাবে, ছাত্রদের মানসিক চাপকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেই ব্যাপারে শিক্ষকদেরও প্রস্তুত করা হবে।
এটি কি ভাবে কার্যকর হবে: এছাড়া, মনোবিক্রিয়া ও সমাজবদ্ধ আচরণ, যেমন মিথ্যা কথা বলা, পালিয়ে যাওয়ার মনোভাব, এবং হতাশা—এই সব কিছু নিয়েও বিশেষ পাঠ দেওয়া হবে। শিশুদের মনোভাব ও আচরণে যে ছোট ছোট অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, তা ভবিষ্যতে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এই সমস্যা গুলি চিহ্নিত করে, পড়ুয়াদের সেই সমস্যাগুলি সমাধান করার কৌশল শিখানো হবে।
এটি পড়ুয়াদের জন্য কেমন উপকারি হবে: পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমাতে এবং তাদের সুখী ও সুস্থ জীবনযাপন করতে এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য তাদের পরিবারকেও এই বইয়ের মাধ্যমে সাহায্য করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্বাস্থ্য ও শারীরিক শিক্ষা পাঠ্যক্রমে এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ছাত্রদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মতামত: উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা সব সময় চেষ্টা করি পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমাতে। এই বইয়ের মাধ্যমে পড়ুয়া এবং তাদের পরিবার উভয়েই বুঝতে পারবে, তাদের সন্তান মানসিক চাপ অনুভব করছে কি না।”