Last Updated on January 31, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো
মাধ্যমিক পরীক্ষা এখন আর বেশি দূরে নয়, হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। ১৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে চলেছে চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা, আর সেই পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ও উদ্বেগের শেষ নেই। বিশেষ করে ইতিহাস বিষয়টি অনেকের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। পড়ুয়াদের অভিযোগ, যত ভালো লিখলেই না কেন, আশানুরূপ নম্বর পাওয়া যায় না। তবে চিন্তা করার কিছু নেই। বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যে কয়েকটি কার্যকরী পরামর্শ দিয়েছেন, তা মেনে চললে আশা করা যায়, সফলতার সুযোগ অনেকটা বেড়ে যাবে।
১. পাঠ্যবই পড়ার গুরুত্ব
যেকোনো পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য সঠিক পাঠ্যবইয়ের উপর মনোযোগ দেওয়া সবচেয়ে জরুরি। বিশেষজ্ঞরা জানান, কমপক্ষে দু’টি ভালো মানের পাঠ্যবই পড়া উচিত। পাঠ্যবইগুলো ভালোভাবে খুঁটিয়ে পড়লে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাহায্য পাওয়া যাবে। বিশেষত, ইতিহাসের মতো বিষয়টি যেখানে সঠিক তথ্য, সাল, স্থান এবং ঘটনা মনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে অন্যান্য রেফারেন্স বইও পড়া ভালো।
২. এমসিকিউ এবং এসএকিউ উত্তর দেওয়ার কৌশল
প্রথমেই বলা যাক এমসিকিউ বা মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের কথা। প্রতি বছর মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষায় ২০টি এমসিকিউ থাকে। এতে সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য ২০ মিনিট সময় দেওয়া থাকে। তবে, প্রথম ১৫ মিনিট প্রশ্নপত্র দেখে এমসিকিউ-র সঠিক উত্তর প্রস্তুত করে ফেলুন, যাতে আপনি সময় বাঁচাতে পারেন।
এসএকিউ বা সিলেক্টেড অ্যাসেন্টেন্স কুয়েশ্চেনের জন্য সময় নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে ২০টি প্রশ্ন থাকে, যার মধ্যে ১৬টি উত্তর দিতে হয়। প্রত্যেক উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা জানান, ম্যাপ পয়েন্টিং-এর জন্য তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও অষ্টম অধ্যায়কে ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে হবে। বিশেষ সালগুলো যেমন ১৯৪৭, ১৯৫২ ইত্যাদি মনে রাখতে হবে।
৩. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কৌশল
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন থাকে মোট ১৬টি, যার মধ্যে ১১টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এই ধরনের প্রশ্নের জন্য আপনাকে ৩৩ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে খুব দ্রুত, সঠিক এবং সঙ্গতিপূর্ণ উত্তর লিখে ফেলতে হবে। পরীক্ষকরা একে একে এবং পরপর লিখতে পছন্দ করেন, তাই খাতায় এক জায়গায় ছড়ানো ছিটানো উত্তর না লিখে, ধারাবাহিকভাবে লিখুন। এটি আপনাকে পুরো নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।
৪. বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নের উত্তর
এটি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে আপনাকে মোট ৬টি বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১৩ মিনিট করে সময় রাখা উচিত, যাতে আপনি বিস্তারিত ও সঠিক উত্তর দিতে পারেন। যে কোনো বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নের উত্তরে ইতিহাসের মূল চারটি অনুসন্ধান—‘কী’, ‘কবে’, ‘কোথায়’ এবং ‘কেন’—এগুলো অন্তর্ভুক্ত করলে উত্তর অনেক বেশি পরিষ্কার ও তথ্যসমৃদ্ধ হবে। এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় বানান ভুল করা থেকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলুন।
৫. ৮ নম্বরের ব্যাখামূলক প্রশ্ন
এ বছর ৮ নম্বরের যে ব্যাখামূলক প্রশ্ন আসবে, তার উত্তর যথাসম্ভব সাবলীল ও বিস্তারিত হতে হবে। ৮টি সাবহেডিং দিয়ে লিখতে চেষ্টা করুন, যাতে পরীক্ষক সহজে আপনাকে পুরো নম্বর দিতে পারেন। এই প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য ২৫ মিনিট সময় রাখা উচিত।
৬. সঠিক অনুশীলন ও সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি
শুধু বই বা নোট মুখস্থ করলেই হবে না। প্রতিদিন নিয়মিত সময় ধরে প্রশ্নের উত্তর লিখে প্র্যাকটিস করুন। সময়ের মধ্যে উত্তর লিখতে পারা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তাই পরীক্ষার মতো সময় সীমা নির্ধারণ করে উত্তর লেখার অভ্যাস করুন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে গিয়ে আপনার লেখা দেখিয়ে নিন এবং সঠিক পরামর্শ নিন।