Madhyamik Exam 2025: শিক্ষার্থীদের মোবাইল স্ক্রিন থেকে মনোযোগ সরিয়ে সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ।

মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে, শিক্ষার্থীদের মোবাইল স্ক্রিন থেকে মনোযোগ সরিয়ে সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ রইল। শিক্ষার্থীদের সঠিক দিশা দেখাতে অভিভাবকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

Mobile phone usage by students, Screen time for studies, Technology and learning

Last Updated on January 29, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো

এখনকার যুগে মোবাইল ফোন শিক্ষার্থীদের জীবনে একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে, তবে যখন মাধ্যমিক পরীক্ষা বা উচ্চ মাধ্যমিক আসন্ন, তখন এই প্রযুক্তি আসল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পরীক্ষার সময়ের প্রস্তুতিতে মনোযোগ ধরে রাখা প্রয়োজন, এবং মোবাইল ফোন বা স্ক্রিনের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি পরীক্ষার ফলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তির স্ক্রিন টাইম বাড়ানোর কারণে, ছাত্রছাত্রীদের মনোযোগ কমে যাচ্ছে এবং তারা পড়াশোনায় আগ্রহ হারাচ্ছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে অভিভাবকরা সঠিকভাবে পরিচালনা করলে প্রযুক্তি এবং মোবাইল ফোন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে।

মোবাইলের স্ক্রিন এবং পড়াশোনার মধ্যে সমন্বয়:

বর্তমান সময়ে, মোবাইল ফোনের স্ক্রিন টাইম অনেক বেড়েছে। একটি গবেষণা অনুসারে, ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন গড়ে ৬ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে সময় কাটাচ্ছে। এই সময়ে তারা পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ কমিয়ে দেয় এবং গেম খেলা, সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য বিনোদনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। তবে অভিভাবকরা যদি সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা এবং প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার শেখাতে পারেন, তবে তা শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার:

আজকাল মোবাইল ফোন ও প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার একটি অংশ হয়ে উঠতে পারে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য মজার অ্যাপ, ভিডিয়ো টিউটোরিয়াল, বা অডিয়োবুক ব্যবহার করা যেতে পারে, যা তাদের শেখার প্রতি আগ্রহ এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করবে। যেমন, গণিত চর্চার অ্যাপ, বিজ্ঞান বিষয়ক ভিডিও টিউটোরিয়াল, এবং বাংলা সাহিত্য বিষয়ক অডিয়োবুক শুনে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে। তবে, সবসময় সময়ের সীমা বেঁধে দেওয়া জরুরি। দুপুরের পর, মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে সময় কাটানোর বদলে শিক্ষার্থীদের বইয়ে মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করতে হবে।

গল্পের মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার:

শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখতে মোবাইল স্ক্রিনের বাইরে যাওয়ার জন্য গল্পের আসর তৈরি করা যেতে পারে। ছোটবেলায়, দাদু-ঠাকুমার কাছে গল্প শোনার অভ্যেস ছিল, কিন্তু এখন সেটি প্রায় ভুলে গেছে শিশুরা। অভিভাবকদের উচিত, নিজেদের কাজের মধ্যেও সময় বের করে গল্প শোনা বা গল্প বলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ উন্নত করা। এতে তারা পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হয়ে উঠবে এবং পড়ার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে।

শখ ও কৌতূহলের প্রতি মনোযোগ:

এখনকার যুগে, শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ে মনোযোগ দেয়া যথেষ্ট নয়। শিক্ষার্থীদের শখ এবং আগ্রহের ক্ষেত্রেও অভিভাবকদের মনোযোগ দিতে হবে। যদি শিক্ষার্থী ছবি আঁকতে ভালোবাসে, তাকে উৎসাহিত করা উচিত, যাতে তার সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের শখ ও কৌতূহল শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে, এবং এটি পরীক্ষার প্রস্তুতিতেও সাহায্য করবে।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটানো:

শুধু স্ক্রিনে সময় কাটানো নয়, শিক্ষার্থীদেরকে প্রকৃতির সান্নিধ্যেও সময় কাটাতে উৎসাহিত করতে হবে। প্রকৃতির মধ্যে যাওয়া, পাখির ডাক শোনা, গাছের ছায়ায় বসে সময় কাটানো শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। পরীক্ষার আগে প্রকৃতির মধ্যে কিছু সময় কাটানো মনোযোগের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে এবং পড়াশোনার চাপ কমাতে সাহায্য করে। অভিভাবকদের উচিত, প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য তাদের সন্তানদের প্রকৃতির মধ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা।

অভিভাবকদের স্নেহশীল ও দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন:

শুধু শিক্ষায় নয়, অভিভাবকদের উচিত সন্তানের বন্ধুর মতো তাদের পাশে থাকা, তাদের চিন্তা ও সমস্যা মন দিয়ে শোনা। তবে, বন্ধুত্বের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। অভিভাবকদের উচিত, সন্তানদের সঠিক দিশা দেখানো, যাতে তারা মোবাইলের স্ক্রিন বা অন্য কোনো উত্তেজনাপূর্ণ বিষয়কে এড়িয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ রাখতে পারে। সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা আসছে, তাই অভিভাবকদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now