Last Updated on February 4, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো
২০২৫ সালের বাজেট প্রস্তুতির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় অনেক আগেই, সাধারণত তার পেশের ছয় মাস আগে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যে বছরে রাজস্ব এবং ব্যয়ের পরিকল্পনা তৈরি করে, তাকে আমরা “কেন্দ্রীয় বাজেট” বলে জানি। এই বাজেট পেশ হবে ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ, যা মোদি ৩.০ সরকারের দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ বাজেট হিসেবে পরিচিত। এতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাদের সপ্তম বাজেট বক্তৃতা পেশ করবেন, যা ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যত রূপরেখা হিসেবে কাজ করবে। বাজেট প্রস্তুতির প্রক্রিয়া শুরু হয় সেপ্টেম্বর মাসে, যখন অর্থমন্ত্রক সমস্ত মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের কাছে একটি বাজেট সার্কুলার পাঠায়। এই সার্কুলারটি মন্ত্রণালয়গুলিকে পরবর্তী বছরের বাজেট অনুমান তৈরি করতে সাহায্য করে এবং তারা তাদের রাজস্ব এবং ব্যয়ের তথ্য জমা দেয়।
প্রতি বছর, কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে তাদের রাজস্ব এবং খরচের অনুমান তৈরি করতে বলে, যা বাজেট প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয়গুলি তাদের সংশোধিত বাজেট অনুমান এবং পরবর্তী বছরের জন্য প্রস্তাবনা জমা দেয়, যা পরে অর্থমন্ত্রক পর্যালোচনা করে। একে একে, সমস্ত মন্ত্রণালয়ের বাজেট প্রস্তাবগুলি চূড়ান্ত করা হয়, এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর, বাজেটের জন্য চূড়ান্ত সীমা নির্ধারণ করা হয়। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতা প্রস্তুত করতে শুরু করেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের সাহায্যে বাজেটের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হয়।
বাজেট প্রস্তুতির প্রক্রিয়া শেষ হলে, একটি ঐতিহ্যগত উৎসব, যা “হলওয়া উৎসব” নামে পরিচিত, অনুষ্ঠিত হয়। এটি একটি প্রথাগত অনুষ্ঠান যেখানে বাজেট ড্রাফট তৈরির পরবর্তী “লক-ইন” প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত গোপনীয়তা বজায় রেখে সম্পন্ন করা হয়, যাতে কোনও ধরনের বাজেটের তথ্য বাইরে না ফাঁস হয়। এরপর, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর, কেন্দ্রীয় বাজেট সংসদে পেশ করা হয়। এটি একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া এবং বাজেটের প্রথমে সংসদে পেশ করা হয়, তারপর তার ওপর আলোচনার প্রস্তাবনা ও সংশোধন শুরু হয়।
ভারতের বাজেট শুধুমাত্র আর্থিক হিসাব-নিকাশের একটি দলিল নয়, এটি দেশের ভবিষ্যতের আর্থিক পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাজেটের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় এবং খরচের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়, যা দেশের নানা খাতে যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, পরিবহন, এবং প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি দেশের অর্থনীতির সঠিক দিশা নির্ধারণে সাহায্য করে এবং সরকার তাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। ২০২৫ সালের বাজেট ভারতের আর্থিক কাঠামো এবং জনগণের জীবনে আরও উন্নতির পথে একটি মাইলফলক হতে চলেছে।